পাকিস্তান ও তুরস্কের প্রতিচ্ছবি হিসেবে বাংলাদেশের পতাকায় ইসলামী অর্ধচন্দ্র যুক্ত করার প্রস্তাব—এই শিরোনামে একটি দাবি দীর্ঘদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে এ দাবির পক্ষে কোথাও কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য বা প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।
ফ্যাক্ট রিভিউ টিমের পূর্ববর্তী যাচাইয়ে দেখা যায়, \@Defence_Index নামক একটি এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে প্রথম এ ধরনের দাবি করা হয়। সেখানে বলা হয়েছিল—বাংলাদেশ নাকি জাতীয় পতাকায় চাঁদ ও তারা যুক্ত করার চিন্তা করছে। তারা একটি কল্পিত ডিজাইনও প্রকাশ করে, যা পাকিস্তান ও তুরস্কের ইসলামিক প্রতীক অনুসরণ করে বানানো। ওই পোস্টটি ২ লাখ ৭ হাজারের বেশি ভিউ পায় এবং তা পাকিস্তান, তুরস্ক ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক ব্যবহারকারীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে, এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এমন কোনো প্রস্তাব, পরিকল্পনা বা বিবৃতি এখন পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি। দেশের শীর্ষস্থানীয় কোনো গণমাধ্যমেও এ নিয়ে কোনো রিপোর্ট নেই। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সাধারণত সরকারি পর্যায়ে আলোচনা, সংসদীয় প্রস্তাব বা প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়—কিন্তু এসবের কিছুই পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি এই দাবির পক্ষে প্রমাণ হিসেবে একটি মিডিয়াম ডটকম ভিত্তিক নিবন্ধ শেয়ার করা হচ্ছে, যার লেখক পরিচয় “Robert Brown” নামে উল্লেখ আছে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, Robert Brown নামে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত কোনো লেখক বা গবেষক নেই, এবং এ নামে কোনো পূর্বপ্রকাশিত গ্রহণযোগ্য লেখা বা গবেষণাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। উপরন্তু, লেখকের ছবির জায়গায় AI জেনারেট করা একটি চিত্র ব্যবহৃত হয়েছে—যা থেকে স্পষ্ট হয় এটি কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রোফাইল নয় বরং বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে তৈরি একটি ছদ্মনাম ব্যবহারকারী অ্যাকাউন্ট।
অতএব জাতীয় পতাকার পরিবর্তন নিয়ে “অর্ধচন্দ্র” যুক্ত করার যে দাবি করা হচ্ছে, তা গুজব এবং সম্পূর্ণভাবে ভিত্তিহীন। এটি মূলত রাজনৈতিক বিভ্রান্তি ও ধর্মীয় উত্তেজনা তৈরির উদ্দেশ্যে ছড়ানো একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রোপাগান্ডা। বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ বা আলোচনার উদ্যোগ নেয়নি।
ফ্যাক্ট রিভিউ টিমের পূর্ববর্তী অনুসন্ধান:
[https://www.facebook.com/share/p/153yssVYAS/](https://www.facebook.com/share/p/153yssVYAS/ “”)
