সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম WION “পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার আগে কি ‘লস্কর-ই-তৈয়বার’ কোনও সদস্য বাংলাদেশি কর্মকর্তার সাথে দেখা করেছিলেন?” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে হেফাজতে ইসলামের নেতা মুফতি হারুন ইজহার এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছবি ব্যবহার করে এক ধরনের বিভ্রান্তিকর ও তথ্যহীন দাবি উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনে সরাসরি কোনো প্রমাণ, সাক্ষ্য কিংবা যাচাইযোগ্য সূত্র ছাড়া ইঙ্গিত দেওয়া হয় যে মুফতি হারুন পাকিস্তানি সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্য। বাস্তবে এই দাবি পুরোপুরি ভিত্তিহীন, অসত্য এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বাংলাদেশে লস্কর-ই-তৈয়বার কোনো কার্যক্রম বা সংগঠনিক উপস্থিতির কোনো তথ্য বা প্রমাণ কখনো পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক মামলায় মুফতি হারুন ইজহারকে গ্রেফতার করা হলেও আদালতে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কোনো প্রমাণ পাওয়া না যাওয়ায় জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। অতএব, তাকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য হিসেবে উপস্থাপন করা শুধু সংবাদ বিকৃতির উদাহরণই নয়, বরং তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারের অংশ।
উল্লেখ্য, WION হচ্ছে ভারতের Zee Media Corporation-এর মালিকানাধীন একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। তথাপি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংস্থাটির তথ্যগত নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষ করে, বহু প্রতিবেদনে উৎসের উল্লেখ না থাকা এবং অতীতে COVID-19 বিষয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলো WION-এর তথ্যকে “Mixed” (মিশ্র) হিসেবে রেট করেছে।
এছাড়া চীন, কানাডা, নেপালের মতো দেশ WION-এর বিরুদ্ধে একাধিকবার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও প্রোপাগান্ডা ঘেঁষা খবর পরিবেশনের অভিযোগ তুলেছে। এসব প্রেক্ষিতে বলা যায়, মুফতি হারুন ও বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার যে দাবি WION তুলেছে, তা আসলে ভারতীয় কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডারই অংশ। বাস্তবে এমন কোনো সাক্ষাৎ বা সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ নেই।